বহির্ভারতে ভারতের জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা সংগ্রাম

বহির্ভারতে ভারতের জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা সংগ্রাম 

  মনে হয় সময়টা ১৯৪৯ কিম্বা ১৯৫০ সাল হবে। আমার তখন তিন কি চার বছর
বয়স,আমার মা আমাকে দুপুরের  শো-তে সিনেমা দেখতে নিয়ে গেছেন।  সেই 
বোধ হয় আমার প্রথম সিনেমা দেখা।  ছবির নাম স্বর্গীয় বিকাশ রায় ও স্বৰ্গীয়া মঞ্জু
দে অভিনীত '৪২'--দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গল্প।  ওই বয়সে জানতাম না 
দেশভাগই বা কী আর স্বাধীনতাই-বা কি , তবে বলতে পারি যে যতটুকু বুঝতে 
পেরেছিলাম তাতে মানসিকভাবে আন্দোলিত হয়েছিলাম।  বিদেশিরা যে অন্যায় 
ভাবে আমাদের দমিয়ে রেখেছিলো নানা রকম ভাবে, তা স্পষ্ট হয়েছিল। এ-ও ধরা
পড়েছিল যে আমরাও গর্জন করতে পারি, পরিকল্পনা মতো এগিয়েও আসতে  পারি।
এরপর যত বড়ো হয়েছি , আরও জেনেছি স্বাধীনতা কী , সংগ্রাম কী  ও কেন,
সুভাষ-ভগত সিং-রাসবিহারী-মাস্টারদা-বিনয়-বাদল-দীনেশ-কানাইলাল--এঁরা কারা,
গদর দল কে ও কী ইত্যাদি।   Where can you buy Swiss movement patek philippe replica watches? Swiss fake online store can be a good choice.
The cheap fake audemars piguet with best quality are worth having.

       জেনেছি যে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সুপরিচিত দুইটি ধারা --সাংবিধানিক 
পথে বিভিন্ন দাবি দাওয়া আদায় করা এবং সশস্ত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাসরি স্বাধীনতা 
ছিনিয়ে নেওয়া।  কিন্তু এই সশস্ত্র আন্দোলনের পথ ছিল বন্ধুর , অনিশ্চিত ও 
যন্ত্রণাদায়ক।  বহু সর্বস্বত্যাগী মানুষ , যুবক-যুবতী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা স্বেচ্ছায় এই দুঃখ
ব্যারন করে নিয়েছিলেন।  কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশই জাতির স্মৃতি থেকে চিরতরে 
হারিয়ে গেছেন।    এটা কোনো জাতির পক্ষে শ্লাঘার বিষয় কিনা তা বলা যাবেনা
নিশ্চিত করে।  তবে অন্তত যাঁদের আমরা আমাদের ইতিহাসে বাঁচিয়ে রাখতে
পারতাম তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগকেই আমরা সচেতন প্রয়াসে ভুলে যেতে দিয়েছি 
এটা নিশ্চয় চূড়ান্ত অগৌরবের।  এই গ্রন্থে সেই সব মেঘাবৃত সূর্যের সামনে থেকে 
আবরণ সরিয়ে তাঁদের লোকসম্মুখে আনার প্রয়াস আছে।  বিশেষত দেশের 
অভ্যন্তরে যে-সব তথাকথিত সহিংস আন্দোলন হয়েছে তার বিস্তারিত ইতিহাস 
লিখিত হলেও দেশের বাইরে প্রায় পাঁচটি মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে অগুনতি 
মানুষ এমনকী বিদেশিরাও ভারতের স্বাধীনতার জন্য সর্বস্ব পণ করেছিলেন তাঁদের 
সেই অগ্রন্থিত কাহিনী জনমানসে পরিস্ফুট করার জন্য আমরা যারা অধমর্ণ তাদের 
নিশ্চয় একটা দায়বদ্ধতা থেকেই যায়।  এই প্রায় তিনশো পৃষ্ঠাব্যাপী প্রবন্ধ সংকলনে
দায়বদ্ধতা পূরণের সেই অতি স্পষ্ট দাবি মেটাবার চেষ্টা করা হয়েছে।  এই প্রজন্মের 
ক'জন জানে লাল হরদয়াল বা ভি জি পিংলার নাম কিংবা তারকনাথ দাস বা 
গুলাব কৌরের নাম ?       

     আমরা জানতে পারি যে অত্যন্ত মেধাবী তরুণরা যাঁদের সামনে পড়েছিল এক 
সুখী ও সমৃদ্ধ জীবনের হাতছানি তাঁরা প্রবাসে বন্ধুহীন পরিবেশে ক্লেশ ও
বিষাদঘন জীবন নির্বাচ করেছিলেন।  কেন? কোন নিশির ডাকে তাঁরা সাড়া দিয়ে 
ঘর ছাড়া হয়েছিলেন ? আক্তার পর একটা ব্যর্থতা তাঁদের হতোদ্যম করেনি।এটা 
কোনো ধর্মোন্মাদের খ্যাপামি নয়।  কিন্তু সব ঘটনার অনুসরণ করলে একটা জিনিস 
স্পষ্ঠত হয় যে নিয়তির সঙ্গে অভিসার যাত্রা যদি ভারতের ভাগ্যলিপি হয় তবে 
ইতিহাসের অমোঘ বাঁকে যেন রাসবিহারীর আবির্ভাব।তিনি অন্য আরো অনেকের 
সঙ্গে তখনও  ব্রিটিশদের বন্ধুদেশ জাপানে বসে বিরুদ্ধ পরিবেশে ভারতের স্বাধীনতার 
কম্পমান আলোর শিখা জ্বালিয়ে রেখেছিলেন।  আজ আমরা ক'জন জানি জানি যে এক
জন অষ্টাদশী জাপানি তরুণী ভারতের চল্লিশ কোটি জনগণের স্বার্থে তাঁর নিজের 
জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর সেই অশ্রুসজল কাহিনী পাঠককে বিস্ময়াহত না 
করে পারেনা।  এর সঙ্গে অবশ্যই অনেকটা তুলনীয় এক জার্মান তরুণী যিনি তাঁর
জীবন অনিশ্চিত ভাগ্যের পায়ে সঁপে দিয়েছিলেন।   

        প্রথম অংশে পাই ভারতের কয়েকজন অল্পবয়সী যুবক, কিছু যুবতীও ছিলেন 
ট্যাংরা ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও জার্মানিতে পুলিশের ও সামরিক বাহিনীর শ্যেনদৃষ্টি 
এড়িয়ে সামান্য অর্থ ও লোকবল নিয়ে সর্বশক্তিমান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ 
হয়েছিলেন।  সেই গদর (বিপ্লব) পার্টি দেশের বাইরে থেকে দেশের ভিতরে বিপ্লবীদের 
অস্ত্র ও লড়াকু সৈনিকদের পাঠিয়েছিলেন।  এদের আন্দোলনের জেরে এই ব্রিটিশরা 
তড়িঘড়ি আইন সংশোধন করে মন্টেগু- চেল্মসফোর্ড সংস্কার করেছিলেন ভারতের
অনুকূলে।  সুদূর জাপানে অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে রাসবিহারীর জীবন কেটেছিল। 
হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র নামে খ্যাত এই আন্দোলনের আমেরিকা পর্বে কয়েক জনের
বিরুদ্ধে একটা বিচার প্রহসন হয়েছিল এবং অত্যন্ত অবিমৃষ্যকারিতার পরিচয় দিয়ে 
রবীন্দ্রনাথের নাম তাতে জড়ানো হয়েছিল ও পরে তা খারিজ হয়ে যায়।   

UK high end fake watches for men at affordable prices can be found from this website.
Meilleur Suisse fausses montres Rolex En ligne Royaume-Uni pour les hommes sont disponibles sur ce web.

  দ্বিতীয় অংশ তুলনামূলকভাবে পরিচিত বেশি।  কিন্তু এখানে নতুন যা 
পাই তা হলো, সুভাষচন্দ্র যে বিরোধিতা করা হয়েছিল তা অনুপুঙ্খের সঙ্গে
উপস্থাপিত হয়েছে। কারণ যতটা না রাজনৈতিক, তার চেয়ে বেশি ছিল ব্যক্তিকেন্দ্রিক।
আর আইএনেতে নেতাজির অভিষেক কোনো ব্যক্তিগত বা একনায়অতন্ত্রী
মনোভাব থেকে নয়।  আবার দেখি রাশবিহারিকে যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নিকটবর্তী 
সময়ে গদর আন্দোলনের হাল ধরার জন্য আহ্বান করা হয়েছিল নেতৃত্ব দিতে 
তেমনই  দ্বিতীয় যুদ্ধের মধ্যভাগে সুভাষচন্দ্র বোসকে  সমস্ত পূর্ব এশিয়াস্থ ভারতীয়
সামরিক ও অসামরিক জনগণ, রাসবিহারী সমেত অধীর,উন্মুখ হয়ে আমন্ত্রণ 
জানিয়েছিলেন সেকশনকার ব্রিটিশবিরোধী সামৰি অভিযানের হাল ধরতে।  ইতিহাসের 
এ-ও এক অমোঘ নির্দেশ। 
         গ্রন্থের শেষাংশে যে মূল্যাম করা হয়েছে তাতে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে 
বোস ও আজাদ হিন্দ বাহিনীর অবিসংবাদিত ভূমিকা বিশ্লেষিত হয়েছে অকাট্য ভাবে।  
   গ্রন্থটির রচয়িতা শ্রী সুদীপ নারায়ণ ঘোষ মহাশয়কে আমার অভিনন্দন অপরূপ
এই সৃষ্টির জন্য, আমার নমস্কার জানাচ্ছি। তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মকান্ডের দিকে আকৃষ্ট 
রইলাম।         
                                                                            শ্রী সুজিত কুমার বসু 
                                                                             প্রাক্তন উপাচার্য  
                                                                  বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতন 
                                                                                ২১/১২/২০১৮